ড্যানিয়েল হাকিকাতজু বনাম এপোস্ট্যাট প্রফেট

 একজন মুমিন ইসলামের সব বিধানের ক্ষেত্রে "শুনলাম এবং মেনে নিলাম" নীতি অবলম্বন করে। এটার মানে এই নয় যে বিধানগুলোর কোনো সায়েন্টিফিক, লজিকাল, ফিলোসফিকাল ভিত্তি নেই। এই বিধানগুলো তিনি দিয়েছেন যিনি সকল জ্ঞানের স্রষ্টা, যিনি সর্বজ্ঞ! তাই কুফফাররা ইসলামী বিধান নিয়ে প্রশ্ন তুললে লজিকাল আর্গুমেন্টে যাওয়া উচিত।

আর সেই জায়গায়ই কাজ করছেন বেশ কিছু ভাই। তেমনই একজন হলেন ড্যানিয়েল হাকিকাতজু। আলোড়িত মূরতাদ রিদভানের সাথে সাড়ে চার ঘণ্টার কনভারসেশনে ভাই ড্যানিয়েল ইসলামী হুদুদ আইনগুলোর যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করেন।
হুদুদ আইনগুলোর মধ্যে আছে যিনার জন্য চাবুক মারার শাস্তি, চুরির জন্য হাতকাটার বিধান, এডালটেরি বা বিবাহ বহির্ভূত যৌনতার জন্য পাথর মেরে হত্যা, মূরতাদকে হত্যা ইত্যাদি আইন। এই আইনগুলো কমনসেন্স দিয়ে ভাবলে আপনার কাছে বর্বর মনে হবে। তৎক্ষণাৎ আবার আপনি তওবাও করবেন, একজন মুসলিম হিসেবে এমনটা আমি ভাবতে পারিনা ভেবে। কিন্তু তারপরও হয়তো আপনার মনে কোথাও একটা সংশয় থেকে যাবে।
এই সংশয়টির কারণ কি জানেন? কারণ হচ্ছে আপনির আইনগুলোকে কমনসেন্স দিয়ে ব্যাখ্যা করেছেন। আর এই 'কমনসেন্স' মূলত কুফফারদের বেঁধে দেয়া নীতিতে চলে। আপনার মধ্যে লিবারেল আইডিওলজি ছোটোবেলা থেকেই পুশ করা হয়েছে, ফলে তাদের আইডিওলজি, তাদের ফিলোসফি আপনার কাছে কমনসেন্সে পরিণত হয়েছে। আর এই জায়গাটিতেই আঘাত দিয়েন ড্যানিয়েল।
তিনি বলেছেন, কেন লিবারেলিজমের এসব মূল্যবোধকে আমরা সঠিক বলে ধরে নেবো? কেন আমরা লিবারেলিজমের নৈতিকতাকে আমাদের নৈতিকতার ভিত্তি বানাবো? এই প্রশ্নগুলো করেই তিনি তাঁর আর্গুমেন্ট বিল্ডাপ করতে শুরু করেন।
শুরুতেই তিনি টপ-ডাউন এবং বটম-আপ সোসাইটি নিয়ে কথা বলেন। টপ-ডাউন সোসাইটি হচ্ছে এমন এক সোসাইটি যেখানে সরকার পর্যায় থেকে জনগণের ওপর আইন চাপানো হয়। কয়েকজনের ফিলোসফিকাল থিংকিংকে সাধারণ মানুষের ওপর আইন হিসেবে চাপিয়ে দেয়া হয়। আর বটম-আপ সোসাইটিতে জনগণের ফিলোসফি প্রাধান্য পায়। ইসলাম অনেকটাই বটম-আপ সোসাইটি বিল্ডাপ করে। কীভাবে? বলছি এখুনি..
প্রথমত ইসলামী আইনগুলো দেখলে বুঝবেন এগুলো মানুষের ফিতরাতের নিকটবর্তী। অর্থাৎ, স্বাভাবিক ও সাধারণ মানব আচরণের কাছাকাছি। যেমন, নারী-পুরুষের সহজাত আকর্ষণকে ইসলাম সমর্থন করে, কিন্তু সমলিঙ্গের আকর্ষণ যেটা অস্বাভাবিক, তা সমর্থন করে না। যেমন, মানুষের পরিবারের প্রতি ভালোবাসা সহজাত, সুন্দর পারিবারিক ব্যবস্থা, পারস্পরিক ভালোবাসা, দায়িত্ববোধ, এগুলো মানুষের জন্য সাধারণ-সহজাত আচরণ, ইসলাম সেটাকে সমর্থন করে৷ অন্যদিকে ইন্ডিভিজুয়ালিজমের মতো অস্বাভাবিক, স্বার্থবাদী মতবাদকে সমর্থন করেনা। অর্থাৎ, ইসলামে সেটাই আইন, যেটা অধিকাংশ মানুষের জন্য সহজাত, স্বাভাবিক এবং বাস্তবসম্মত। এ কারণে ইসলাম বটম-আপ সোসাইটি বিল্ডাপে সক্ষম।
লিবারেলদের ইউটিলিটারিয়ান প্রিন্সিপালের মূলকথা হচ্ছে 'সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষের সুখ নিশ্চিত করা'। অর্থাৎ, সমাজের অধিকাংশ মানুষকে সুখী করা। ভাই ড্যানিয়েল আর্গু করেন যে, ইসলাম সেটা করে 'স্টেবল ফ্যামিলি' এস্টাবলিশ করার মাধ্যমে। স্টেবল ফ্যামিলি কি? স্টেবল ফ্যামিলি হলো সেটাই, যেখানে একে অপরের প্রতি ভালোবাসা, দায়িত্ববোধ থাকবে, সংহতি থাকবে, সম্পর্কের গাঢ়ত্ব থাকবে। আরো ব্রডলি বললে স্বামী-স্ত্রী একটি স্থায়ী সম্পর্কে আবদ্ধ থাকবে, সন্তান-সন্ততি পিতৃপরিচয় জানবে, পিতা-মাতার কাছ থেকে স্বীয় অধিকার পাবে আবার দায়িত্ব পালন করবে। জীবনের প্রাথমিক শিক্ষা তাঁদের কাছে পাবে। আর অধিক সংখ্যক স্টেবল ফ্যামিলি একটি স্টেবল সমাজ তৈরি করবে যা আল্টিমেটলি সামগ্রিক সুখের দিকে নিয়ে যাবে।
সামগ্রিক সুখের আরেকটি ফ্যাক্টর হিসেবে ড্যানিয়েল এনেছেন সোশাল কোহিশন বা সামাজিক সংহতির/ সংযোগের কথা। আর সামাজিক সংযোগের বেশকিছু ফ্যাক্টর হলো পোশাকের মিল, ভাষার মিল, সম্মিলিত আচার অনুষ্ঠান পালন এবং একই সাথে বিশ্বাসের মিল। মানব ইতিহাস ঘাঁটলেই সামাজিক সংযোগের ক্ষেত্রে এইসব ফ্যাক্টরগুলোর যৌক্তিকতা বোঝা যাবে।
এখন আসি এসবের সাথে ইসলামী আইনগুলোর সম্পর্ক কী? আছে। প্রথমেই আসি এডালটেরি বা বিবাহ-বহির্ভূত যৌন সম্পর্কের ব্যাপারে। লিবারেলদের কনসেপ্ট হলো, নারী-পুরুষ উভয়েই নিজস্ব কনসেন্টে অনেকের সঙ্গেই শারিরিক সম্পর্ক করতে পারে। এতে সমস্যা কোথায়?
সমস্যা হচ্ছে এটা স্টেবল ফ্যামিলি ভাঙে। একজন পুরুষ তার স্ত্রীর বাইরে অন্য একজন নারীর সঙ্গে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক করলে তার পরিবারে ভাঙনের সৃষ্টি হয় কী-না? আবার সেই নারী থেকে সন্তান হলে সেই সন্তান অনেকক্ষেত্রে পিতৃপরিচয়হীন হিসেবে বড়ো হয়। ফলে বাবার কাছ থেকে অধিকার, কিংবা সন্তানের প্রতি দায়িত্ববোধ, স্টেবল ফ্যামিলির এই ফ্যাক্টরগুলো না থাকায় স্টেবল ফ্যামিলি ভেঙে যায়।
হাল আমলের সিঙ্গেল মাদারহুড ফেমিনিস্টদের মধ্যে জনপ্রিয় একটি কনসেপ্ট হলেও এর পরিণতি যে মারাত্মক সামাজিক অসংহতি ডেকে আনছে, তা একটু ভাবলেই উপলব্ধি করা যায়। সিঙ্গেল মাদারহুডে বেড়ে ওঠা সন্তান কিংবা পিতৃপরিচয়হীন সন্তানদের বিভিন্ন অপরাধে জড়িত হওয়ার, মাদকসেবন করার হার অনেক বেশি। এগুলো ভেরিফাইড স্টাডি, ওয়েস্টে এমন অনেক পরিসংখ্যান হয়েছে। এডালটেরি স্টেবল ফ্যামিলি ভাঙে, সামাজিক অসংগতি তৈরি করে, তাই এটার জন্য ইসলামী আইন পাথর মেরে হত্যা। যিনার ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা তাই। যিনার জন্য সামাজিক কোহিশন নষ্ট হয়। ফিজিকাল রিলেশনের জন্য হাই এবোরশন রেইট, চিট করার দরুণ সুইসাইড এসব তো একেবারে চাক্ষুষ প্রমাণ এটিকে সামাজিক সংহতি বিনষ্ট করার উপাদান বলার জন্য। তাই যিনার শাস্তির বিধান আছে ইসলামে।
প্রধান যেই টপিক তা হলো মূরতাদকে হত্যার শাস্তি। কেউ ইসলাম ত্যাগ করলে তাকে আমরা শাস্তি দেবো কেন? মূরতাদের ক্ষেত্রে শাস্তির আগেও কয়েকটি কাজ আছে। তিনদিনের সুযোগ দেয়া হয় তাওবার, এরপর হত্যার বিধানের কথা আসে। যাহোক, ব্যাসিকালি হত্যাটা কেন?
্যাশনাল পার্সপেক্টিভ থেকে চিন্তা করলে উত্তরটি পাবেন। সামাজিক স্থিতিশীলতা, কমিউনিটির স্থিতিশীলতা কিন্তু পারস্পরিক সাদৃশ্যের ওপর নির্ভর করে। একই পোশাক, একই ভাষা, একই ধর্ম ইত্যাদি হচ্ছে ফ্যাক্টর সামাজিক সংহতির কিংবা ঐকতানের জন্য৷ সেখানে যদি বিদ্রোহ, বিরোধিতা, বৈসাদৃশ্য তৈরি হয়, সেটা ঐকতান নষ্ট করে, থ্রেট তৈরি করে। ফিলোসফিকালি চিন্তা করলে এটা আপনি বুঝতে পারবেন কিন্তু লিবারেলদের বেঁধে দেয়া কমনসেন্সে চিন্তা করলে পারবেন না।
আচ্ছা যারা এর বিরোধিতা করে সেই লিবারেলরা কি এ ধরণের হত্যাকে সমর্থন করে কী-না দেখতে ইচ্ছে করেনা? জন স্টুয়ার্ট মিল, যিনি বলা যায় লিবারেলিজমের একেবারে গোড়ার মানুষ, তিনি রাষ্ট্রীয় আইনের বিরোধিতাকারীর ক্যাপিটাল পানিশমেন্ট বা হত্যাকে সমর্থন দিয়েছেন! ইভেন যেই লিবারেল আমেরিকা এখন দাঁড়িয়ে আছে, তারা অসংখ্য বিরুদ্ধ মত এমনকি প্রাচীন লিবারেল নেতাদেরও হত্যা করেই আজকের এই অবস্থানে এসেছে। আজকে যেই আমেরিকা ফ্রীডম অফ স্পিচের বুলি ঝাড়ে, তা এজন্য যে দুয়েকজন ইন্ডিভিজুয়াল কথা বললে তাদের কিছু আসে যায়না। কিন্তু যদি সংঘবদ্ধ একটি গোষ্ঠী আমেরিকার আইডিওলজির বিরুদ্ধে দাঁড়ায়, তখন কি তারা ফ্রিডম অফ স্পিচ মানবে? নাকি অতীতের মতই অস্ত্র দিয়ে রুখবে?
এখন আরেকটা আর্গুমেন্ট হয়তো আনা হবে। ইসলাম তো ভালো মোরাল ফিলোসফি শেখাচ্ছে, তাহলে দুয়েকজন যদি এদিক সেদিক করেও, তাতে ইসলামের ক্ষতি কি? ইসলাম কি এতোই দুর্বল যে এতে ইসলামের ভিত নড়ে যাবে? ড্যানিয়েলের আর্গুমেন্ট হচ্ছে এইযে কোভিড-১৯, এটা মোকাবেলার জন্য লকডাউন আইন করে ইম্পোজ করা হয়েছে। কেন? মানুষ কি বোঝেনা এতে তাদের ক্ষতি? তাহলে কেন পুলিশ মোতায়েন জরুরী? ওয়েল, সিম্পল উত্তর হচ্ছে মানুষ ইর্যাশনাল। কিছু কিছু মানুষ সর্বদাই ইর্যাশনাল, তাদের জন্যই আইনকানুন দরকার হয়, এমন নয় যে আইন তাদের ভয় পায়। বরং আইন বাকিদের রক্ষা করতে চায়, সামাজিক সংহতি রক্ষা করতে চায়, সমাজকে ভাঙতে দিতে চায় না।
রিদভান পুরো কনভারসেশন জুড়ে তেমন কোনো যুক্তিই দিতে পারেনি। ড্যানিয়েল ফিলোসফি, ইভলিউশন, এনথ্রোপলজি মিলিয়ে একটা আর্গুমেন্ট তৈরি করে, আর সেটার উত্তরে রিদভান বলে "It doesn't make any sense." এটাই তার কাউন্টার আর্গুমেন্ট। আর কিছুক্ষণ পরপর তার এজ ইউজুয়াল ছাগলের মতো হাসিটা হাসে। একজন হার্ভার্ড পাশ লোকের সঙ্গে এক মূর্খকে বসিয়ে দিলে যা হয় আরকি!
রিদভান বলে লিবারেল ফিলোসফিই নাকি পাশ্চাত্যের আজকের এই সম্পদশালী হওয়ার সিক্রেট। অথচ পাশ্চাত্যের নির্লজ্জ কলোনিয়ালিজমের ইতিহাস কে না জানে? বাকি বিশ্ব থেকে লুট করা সম্পদের ওপর নিজেদের রাজত্ব দাঁড় করিয়ে তারা এখন ইউটিলিটারিয়ানিজমের বুলি ঝাড়ে।
ড্যানিয়েল একটি প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন, যদি লিবারেল ফিলোসফিই উন্নতির মূল হতো, তাহলে ওয়েস্ট ছাড়া বাকি যেসব দেশ লিবারেল ফিলোসফি গ্রহণ করেছে তাদের উন্নতি নেই কেন? এই প্রশ্নের সদুত্তর রিদভান কেন, কোনো লিবারেলের কাছেই নেই। আলোচনার এক পর্যায়ে দেখা যায়, রিদভান মূলত ইউটিলিটারিয়ানও না। কেননা তাকে প্রশ্ন করা হয়, কোনটা বেটার ওয়ার্ল্ড, এখন বর্তমানে যেটা যেখানে পৃথিবীর অধিকাংশ সম্পদ পাশ্চাত্যের কুক্ষিগত, নাকি বিশ্বের সব দেশের মধ্যে বিলিয়ে দিয়ে সমান সমান সম্পদের একটি বিশ্ব? এই প্রশ্নের উত্তরে রিদভান সম্পদ অসমতাই সমর্থন করে, যা প্রমাণ করে সে একজন পাশ্চাত্যবাদী দালাল, লিবারেলও নয়।
এই ভিডিওতে বেশ কিছু আর্গুমেন্ট পাবেন। একটি ছোট্ট লিস্ট দিচ্ছিঃ
১. লিবারেলিজম কি ডমিনেটিভ নয়? যদি না হতো, তাহলে কেন স্কুলগুলোতে লিবারেল কন্সেপ্ট বাধ্যতামূলক পড়ানো হচ্ছে? ব্রুনাই যখন ইসলামী হুদুদ আইন বাস্তবায়ন করতে গিয়েছিলো তখন তাদেরকে বিশ্ব অর্থনীতি থেকে কাট-অফ করে কেন সেটা বাদ দিতে বাধ্য করা হলো?
২. হোমোসেক্সুয়ালিটিকে ইউটিলিয়টারিয়ান পার্সপেক্টিভ থেকে এবং মর্ডানিজম দিয়ে আমরা স্বাভাবিক যৌন আচরণ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছি। আমরা কারা? আমাদের মোরালিটির ভিত্তি কী? utilitarianism এবং modernism কি বৈজ্ঞানিক, দার্শনিক, সামাজিক সব পার্স্পেক্টিভ থেকে সত্য বলে প্রমাণিত? স্বাভাবিক যৌন আচরণের সাথে সাংঘর্ষিক একটি তত্ত্বের মতামত আমরা কেন গ্রহণ করবো?
৩. 'Human rights', 'Equality', 'Freedom' এই টার্মগুলোর ডেফিনিশন কি? এই টার্মগুলো কে বা কারা ডিফাইন করবে? তাদের ডেফিনিশন আমরা কেন সত্য বলে মেনে নিবো?
৪. দাসপ্রথা বর্বর হলে শ্রমবিক্রির যে প্রচলিত পদ্ধতিটি সেটি কি দাসত্বের নামান্তর নয়? অধিক বর্বর নয়? শিল্প বিপ্লবের সময় বাই ডেফিনিশন, আর এখন পরোক্ষভাবে এনস্লেইভমেন্ট কি চলছে না? শ্রমিকদের কি তাদের মালিক পরোক্ষভাবে own করছে না? আমাদের সমাজে কি শ্রেণিবিভাগ নেই? দাসদের তো ইসলাম অধিকার, নিরাপত্তা দিয়েছে। পুঁজিবাদী সমাজ শ্রমদাসদের কি কি অধিকার নিরাপত্তা দিয়েছে? আর দাসপ্রথার সমালোচনা করার আগে বলুন, যুদ্ধবন্দীদের সাথে কিরূপ আচরণ করা অধিক মানকবিক? তাদেরকে বর্বর উপায়ে হত্যা করা নাকি অধিকার ও নিরাপত্তা দিয়ে দাস-দাসী হিসেবে গ্রহণ করা?
৫. এইযে রিসেন্টিলি metoo মুভমেন্ট হলো, বেশিরভাগ দেখা গেছে অফিসগুলোতে কলিগদের দ্বারা যৌন হয়রানির স্বীকার। পাশ্চাত্যের দেশগুলোতে বিপুল পরিমাণে যৌন হয়রানির ঘটনা দেখা যায়। ফ্রিমিক্সিং নরমালাইজ করার পরেও এমনটা কেন হচ্ছে? আপনাদের আর্গুমেন্ট তো এটাই যে ফ্রিমিক্সিং যতো বেশি হবে, অস্বাভাবিক যৌন আচরণ মানুষের ততো কমবে, এটা যৌন হয়রানির সংখ্যা কমাবে। তাহলে পাশ্চাত্যেই বিশেষ করে আমেরিকার যে বিশাল সেক্সুয়াল হ্যারাজমেন্ট রেইট, এটাকে কীভাবে জাস্টিফাই করবেন। আর তাছাড়া এই নরমালাইজ করার ট্রেন্ডটি ৫০-৬০ বছর থেকে চালু হয়েছে, ফ্রি মিক্সিং কনসেপ্ট বেশি পুরনো নয়। তাহলে কি বলতে হয় যে আমরা অকারণ এই পন্থা অবলম্বন করেছি? হয়তো আগের সময়টাই ভালো ছিলো? হয়তো ফ্রী মিক্সিং না হলেই সমস্যা সমাধান হতো? Can you think both way?
এরকম আরো বহু আর্গুমেন্ট দিয়ে সাড়ে চার ঘণ্টার এই ভিডিওটি ভরা। এই ভিডিওটিতে এতো পরিমাণ চিন্তার খোরাক পাবেন, যা অকল্পনীয়। এই ভিডিওটি হয়তো ইসলাম সম্পর্কে মুসলিম-অমুসলিম অনেকেরই চিন্তার দুয়ার খুলে দিতে পারে। নতুন করে ভাবতে শেখাতে পারে।
স্রষ্টার কোনো বিধান অবান্তর নয়। স্রষ্টা মানুষের ভূত-ভবিষ্যৎ চিন্তা করেই আইন বানিয়েছেন, মানুষ যতোই প্রবৃত্তির পূজো করার জন্য নতুন নতুন নিয়ম বানাচ্ছে, ততোই তারা অধপতনের দিকে চলে যাচ্ছে। আল্লাহর আইন নিয়ে ভাবুন, হিকমাহ বোঝার চেষ্টা করুন।কমনসেন্স দিয়ে কিছু বিচার করার আগে দেখে নিন, আপনার এই কমনসেন্সটি কার ঠিক করে দেয়া? চিন্তার মানদণ্ড ঠিক করুন, জীবন বদলে যাবে ইন-শা-আল্লাহ।
Image may contain: 2 people, text that says 'CAN ISLAMIC LAW BE JUSTIFIED? Vs APOSTATE PROPHET - DANIEL HAQIQATJOU'

Post a Comment

2 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.
  1. জাযাকাল্লাহু খাইরান।

    ReplyDelete
  2. আপনি কোনো বই কেন বের করছেন না? আপনার লেখার হাত ভালো মাশাআল্লাহ।

    ReplyDelete