সত্য নবী সিরিজ

 দ্বিতীয় হিজরির ঘটনা। মদীনায় মুসলমানরা নতুন। চারদিক শত্রুবেষ্টিত। মদীনার ইহুদী ও কাফিররা, মক্কার কাফিররা, মদীনার আশেপাশের অঞ্চলের গোত্রগুলো, সব মুসলমানদের বিপক্ষে। মুসলমানরা আক্রমণের আশঙ্কায় ভীতসন্ত্রস্ত থাকতেন। সাহাবীরা ঘুমোনোর সময়ও অস্ত্র নিয়ে ঘুমাতেন। 


এমনই এক রাতে রাসূল (স) জেগে ছিলেন, ঘুমাতে পারছিলেন না। হযরত আয়িশা (রা) তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, "ইয়া রাসূলুল্লাহ (স), ব্যাপার কি?" তিনি বললেন, "আমার কোনো হৃদয়বান সাহাবী যদি আজ রাতে আমাকে পাহারা দিতো!" তখনই অস্ত্রের ঝনঝনানি শোনা গেলো। রাসূল (স) জিজ্ঞেস করলেন, "কে ওখানে?" জবাব এলো, "আমি সাদ ইবনে মালিক (রা)"। রাসূল (স) জিজ্ঞেস করলেন, "তুমি কেন এসেছো?" তখন সাদ বললেন, "আপনাকে পাহারা দিতে এসেছি ইয়া রাসূলুল্লাহ (স)!" এরপর রাসূল (স) নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে পড়েন। আয়িশা (রা) বলেন, "আমি তাঁর নাক ডাকার আওয়াজ শুনতে পেলাম"। 

(ফাতহুল বারী ১৩/২৩২, মুসলিম ৪/১৮৭৫, আহমাদ ৬/১৪১) 

কিন্তু এর কিছুদিন পর সূরা আল মায়িদার ৬৭ নং আয়াতটি নাযিল হয়। আল্লাহ বলেন, 

وَ اللّٰہُ یَعۡصِمُکَ مِنَ النَّاسِ

"আর আল্লাহ তোমাকে মানুষ থেকে রক্ষা করবেন"। 

এখানে মানুষ বলতে শত্রু। এই আয়াত নাযিলের পর পর রাসূল (স) বেরিয়ে আসেন এবং প্রহরীদের বলতে থাকেন, "তোমরা চলে যাও। আমি আমার প্রভুর আশ্রয়ে এসে গেছি, এখন আর তোমাদের প্রয়োজন নেই।" 

(তিরমিযী ৮/৪১০)

এরপর রাসূল (স) তাঁর পরবর্তী জীবনে ২৯ টি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন। সম্মুখযুদ্ধ, যেই যুদ্ধে শহীদ হওয়াটা ছিলো সাধারণ ব্যাপার। অনেকে তাকে গোপনে হত্যার পরিকল্পনা করেছে। না যুদ্ধ, না গোপন হত্যা, কোনো কিছুতেই তাঁর কিছু করতে পারেনি কেউ। তাঁকে হেফাজত করেছেন স্বয়ং আল্লাহ রাব্বুল আ'লামীন। কারণ, এটা ছিলো তাঁর ওয়াদা। 

যারা বলেন, রাসূল (স) কুরআন লিখেছিলেন, এরকম একটা বোল্ড ভবিষ্যৎবাণী তিনি কীভাবে করে থাকবেন? তাও এতো কনফিডেন্টলি? এটা কি শুধুই কো ইন্সিডেন্স? থিংক র‍্যাশনালি, উত্তর পেয়ে যাবেন ইন-শা-আল্লাহ।  

||সত্য নবী সিরিজ||

Post a Comment

1 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.