No title


রাফখাতায় কী হয়? রাফখাতায় আমরা সাধারণত আমাদের এলোমেলো চিন্তাভাবনা কিংবা গাণিতিক হিসেবগুলোকে সাজানোর চেষ্টা করি। এই রাফখাতা আমাদেরকে যেমন গণিতের সমাধান দেয়, তেমনি আমার মূল কাজের একটা সুন্দর আউটপুটও দাঁড় করায়।
অন্যদিকে বিপ্লব বলতে আমরা যা বোঝাচ্ছি তা হলো - একটি সভ্যতাকে উৎখাত করে অন্য একটি সভ্যতা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার ব্যাপারটি। এটা হতে পারে কোনো রাজনৈতিক মতবাদ দ্বারা কিংবা ধর্মীয় মতবাদ দ্বারা।
একটা বিপ্লব হওয়ার অনেকগুলো ফ্যাক্টর আছে। তার মাঝে একটি হলো অনেক মনীষীর ভাবনা, অনেকের হিসেব-নিকেশ, অনেকের পরিকল্পনা - যা জমা থাকে সাহিত্যের রাফখাতায় - একসময় উপহার দেয় বিপ্লব যা নতুন সভ্যতার গোড়াপত্তন করে।
সাহিত্য বিপ্লব ঘটাতে পারে, এই দাবির পক্ষে আমার প্রমাণ কী? অন্তত ঐতিহাসিক প্রমাণ না থাকলে এটা একটা অন্তঃসারশূন্য ক্লেইম হয়ে যাবে। তাই, আমি আমার কথার পক্ষে কিছু ঐতিহাসিক প্রমাণাদিও উপস্থাপন করতে চাই। তবে, এই ঘটনাগুলো দেখার ক্ষেত্রে একটা জিনিস খেয়াল রাখা গুরুত্বপূর্ণ। আমি এগুলোকে কোনো পজিটিভ কিংবা নেগেটিভ উদাহরণ হিসেবে টানছি না। আমি উদাহরণে উল্লেখিত বিপ্লবগুলো ভালো নাকি খারাপ, সেই আলাপে যাবো না। বিপ্লব হয়েছে এবং সেই বিপ্লবে সাহিত্যের একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিলো - এটাই আমার মূল বক্তব্য।
১. প্রোটেস্টেন্ট বিপ্লবঃ ষোড়শ শতকে খ্রিষ্টান ক্যাথলিক চার্চের বিরুদ্ধে হওয়া প্রোটেস্টেন্ট আন্দোলন। এটি খ্রিষ্টান ধর্মের রিফর্মেশনের দাবি জানিয়েছিলো৷ প্রোটেস্টেন্টরা চার্চের অথোরিটিকে প্রশ্ন করেছিলো, পোপদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিলো। তারা মানুষকেন্দ্রিক খ্রিষ্টানধর্ম উৎখাত করে স্রষ্টাকেন্দ্রিক খ্রিষ্টান ধর্ম কায়েমের জন্য আন্দোলন করেছিলো। তারা যা দাবি করেছিলো, তা অস্তিত্বশীল খ্রিষ্টান ধর্মের সম্পূর্ণ বিপরীত ছিলো। ফলে, তাদের আন্দোলন সফল হওয়াটা ছিলো একটা বিপ্লব। এই বিপ্লবের সাক্ষী হয়েছিলো ইউরোপ এবং ব্রিটেন। এই বিপ্লবের ফলস্বরূপ ইউরোপের অধিকাংশ খ্রিষ্টানরা প্রোটেস্টেন্ট হয়ে গিয়েছিলো। এটা নিঃসন্দেহে সভ্যতার পরিবর্তন। শুধু তাই নয়, এই প্রোটেস্টেন্ট আন্দোলনই পরবর্তীতে ইউরোপের এনলাইটেনমেন্টের একটা প্রণোদনা কিংবা বিভবশক্তি তৈরি করেছিলো।
এই পরিবর্তনে সাহিত্যের কী ভূমিকা ছিলো? প্রোটেস্টেন্ট বিপ্লবের সময় জার্মানির উইটেনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের থিওলজির প্রোফেসর মার্টিন লুথার "Ninty-five theses" নামে একটি বই প্রকাশ করেন যা ক্যাথলিক চার্চের পোপদের "পাপ ক্ষমা করার ক্ষমতা" এবং ক্ষমাপত্র টাকার বিনিময়ে বিক্রির বিরুদ্ধে লেখা। এই থিসিস প্রকাশিত হওয়ার কিছুদিনের মধ্যে শুধু জার্মানি না, সারা ইউরোপে আলোড়ন তোলে। সোশাল মিডিয়ার যুগে আমাদের কাছে বিষয়টি সহজ মনে হলেও, কাগজের যুগের কথা ভাবলে বিষয়টি অতো সহজ লাগার কথা না। এই ঘটনাটকে বিপ্লব আখ্যা দিয়েছেন Richard Viguerie এবং David Franke তাঁদের যৌথ বই বইয়ে।
"The revolution came in the weeks following Luther's posting... as his arguments spread across Europe with a rapidity never before seen, and reached the lay public -- beyond the clerical community -- that until this point had been precluded from involvement in theological issues... .That was the revolution, and it was a revolution wrought by the printing press." [১]
এই থিসিস আলোড়িত হওয়ার পেছনে বেশ কিছু ফ্যাক্টর ছিলো। জার্মানে অক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন মানুষ ছিলো খুব কম। তার মাঝে ল্যাটিন ভাষা জানতো, এমন মানুষ ছিলো আরো কম। লুথার তার লেখাজোঁকা জার্মান ভাষায় প্রকাশ করার চেষ্টা করেন জার্মানভাষী পাঠকদের ধরার জন্য, আবার একই লেখা ল্যাটিনেও প্রকাশ করেন। এতে তিনি দুই ক্যাটাগরির অডিয়েন্সই ধরতে সক্ষম হয়েছিলেন। প্রোটেস্টেন্টদের এক্টিভিটির বিপরীতে ক্যাথলিকরা কিছু বছর পর লিখতে শুরু করে। কিন্তু ততদিনে দেরি হয়ে গেছে, ইউরোপে ইতোমধ্যেই প্রোটেস্টেন্ট বিপ্লব হয়ে গিয়েছিলো। আর তাছাড়া ক্যাথলিকদের লেখাজোঁকা ছিলো ল্যাটিনে, তাই তারা অত অডিয়েন্সও ধরতে পারে নি।
এছাড়া এই ষোড়শ শতক ছিলো কবিদের শতক। বিখ্যাত চিত্রশিল্পী ও কবি মাইকেল এঞ্জেলো, ম্যাকিয়াভেলি, পিয়েরে দি রনসার্ড এই সময়েরই মানুষ ছিলেন। অন্যদিকে লুথারও ছিলেন কবি। তাই তার কাব্য ফ্লেভারে লেখা বাইবেলের অনুবাদ প্রচুর বিক্রি হয়। সেটাকে বলা হতো ষোড়শ শতকের বেস্ট সেলার যা তিন বছরে ৪৩ মুদ্রণ বিক্রি হয়েছিলো।
লুথারের লেখনীর এই বিপ্লবের আগুন ছড়িয়ে পড়ে সারা ইউরোপে। ইউরোপে ক্যাথলিকদের ওভার-ট্রাম্প করে প্রোটেস্টেন্টরা প্রভাবশালী হয়ে ওঠে। এটাই সাহিত্যের শক্তি।
২. ইংরেজ বিপ্লবঃ পঞ্চাশ বছরের ব্যবধানে ব্রিটেনে দুটো বিপ্লব হয়েছিলো। একটি ১৬৪২ সালে, অন্যটি ১৬৮৮-তে। ১৬৪২ সালে প্রথম চার্লসের রাজত্বের সময় গৃহযুদ্ধ শুরু হয় স্কটল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ডে। Cavaliers আর Roundheads এই দুই গ্রুপের মাঝে যুদ্ধে Cavaliers-গণ হেরে যান এবং রাজা প্রথম চার্লস নিহত হন। এরপর পার্লামেন্ট ঠিকঠাকই চলছিলো। কিন্তু, এরপর ১৬৫৮ সালে অলিভার ক্রমওয়েলের মৃত্যুর পর রাজা দ্বিতীয় চার্লস ক্ষমতায় আসেন যিনি প্রথম চার্লসের পুত্র ছিলেন। বিপত্তি বাঁধে অন্য জায়গায়। দ্বিতীয় চার্লসের পরে ক্ষমতায় আসার কথা তার ভাই জেমসের। কিন্তু জেমস রোমান ক্যাথলিক হওয়ায় জনগণের সাথে তার একটা বুনিয়াদগত ঝামেলার সৃষ্টি হয়।
এদিকে জেমস বিরোধীপক্ষকে হত্যা, দমন-পীড়ন করতে থাকেন যা বাধ্য করে দ্বিতীয় বিপ্লব ঘটাতে। এখন এই বিপ্লবে কোন সাহিত্য, কোন বই ভূমিকা রেখেছে? উত্তর হলো - বাইবেল। হ্যাঁ, ঠিক শুনেছেন৷ বাইবেল এই দুটো বিপ্লব ঘটানোর ক্ষেত্রে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিলো।
প্রথমত, বাইবেল ইংরেজিতে অনুদিত হয়ে বহুল পঠিত হওয়ার কারণে একটা "English Supremacy" তৈরি হয়েছিলো। এটি ইংরেজ জাতীয়তাবাদকেও প্রণোদিত করেছিলো।
দ্বিতীয়ত, ইংরেজদের জন্য একটা গাইডলাইন প্রয়োজন ছিলো যা তারা অনুসরণ করতে পারে। রাশিয়ানদের মার্ক্সের লেখনী ছিলো, ফ্রেঞ্চদের রুশো, এমনকি আমেরিকানদের ছিলো লক, ফ্র‍্যাঙ্কলিন। সেই অনুপাতে ইংরেজদের তেমন কিছুই ছিলো না বলতে গেলে। তাই, তারা খুব কঠোরভাবে বাইবেলকে অনুসরণ করতো। আর এটা যেহেতু স্রষ্টার বাণী হিসেবে তারা বিশ্বাস করতো, সেক্ষেত্রে এটার চেয়ে উত্তম অনুসরণীয় আর কী হতে পারে?
এছাড়া বাইবেল সাহিত্যেরও উৎস্য হিসেবে বিবেচ্য হতো। হবস, মিল্টন, হ্যারিংটনসহ বহু লেখককে এবং নিউটন, কেপলারসহ বহু বিজ্ঞানীকে প্রভাবিত করেছিলো বাইবেল।
আরেকটি ব্যাপার হলো প্রোটেস্টেন্টিজমের কল্যাণে আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা বাইবেল পড়তে পারছিলো। ফলে প্রতিটি পক্ষই নিজ নিজ অথোরিটি ক্লেইম করার জন্য বাইবেল ব্যবহার করতো। এর ফলে মেরুকরণ হচ্ছিলো এবং সেইসাথে সংঘাত অনিবার্য হয়ে উঠছিলো।
আর এই কারণেই যখন ঐতিহাসিক জেক ফিশারকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিলো, ষোড়শ শতকের ব্রিটেনের অবস্থা বুঝতে কী পড়বো, তিনি বলেছিলেন,
"বাইবেল পড়ো।"
[২]
৩. ফ্রেঞ্চ বিপ্লবঃ ফ্রেঞ্চ বিপ্লবের আগে ফ্রান্সের অবস্থা ছিলো ভয়াবহ। একটি রাষ্ট্রে যত প্রকারের অসংগতি আপনি ভাবতে পারেন, সবগুলোই বিদ্যমান ছিলো সেখানে। মানুষ তিনভাগে বিভক্ত ছিলো। পাদ্রীগণ, নোবেলগণ আর সাধারণ মানুষ। সব সম্পদ কুক্ষিগত করে রাখতো পাদ্রী ও নোবেলগণ। পাদ্রীগণ রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকা ব্যক্তিবর্গের সাথে হাত মিলিয়েছিলেন বলে সবাই মিলে লুটেপুটে খাচ্ছিলেন দেশকে। ধর্ম চলে গিয়েছিলো চুলোয়। এইসময় সাধারণ মানুষের মাঝখান থেকেই বিপ্লব আসে।
আর এই বিপ্লব সাহিত্য দ্বারা ভীষণ প্রভাবিত ছিলো। বিশেষত তিনজন লেখক - মন্টেস্কু, ভলতেয়ার এবং রুশো - দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলো এই বিপ্লব। রুশোর "The Social Contract" সবচেয়ে বেশি প্রভাব বিস্তারকারী ছিলো। উইল ডুরান্ট তাঁর "Rousseau and Revolution: History of Civilization" বইয়ে উল্লেখ করেছেন কীভাবে এসেম্বলির প্রতিনিধিগণ সকলেই রুশো পড়েছিলেন এবং তাঁর লেখা দ্বারা প্রভাবিত ছিলেন। তিনি এটাও উল্লেখ করেছেন, এমনকি খোদ প্রেসিডেন্ট রোবসপিয়ের রুশোকে বিপ্লবের আধ্যাত্মিক জনক বলে আখ্যা দিয়েছিলেন। ডুরান্ট আরো বলেন,
এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের হেড জর্জেস ডান্টন তাঁর লাইব্রেরীতে ভলতেয়ারের ৯১ ভলিউম, রুশোর ১৬ ভলিউম বই রেখেছিলেন এবং নিয়মিত পড়তেন।
আর এভাবেই ফ্রেঞ্চ বিপ্লব ছিলো মূলত এই কালজয়ী লেখকদের লেখারই একটা একশন মাত্র।
এছাড়াও আমেরিকার গৃহযুদ্ধ [ যা দাসপ্রথা উচ্ছেদকরণ নিয়ে হয়েছিলো ] বিশেষভাবে অনুপ্রাণিত হয়েছিলো হ্যারিয়েট বিচার স্টুর [Harriet Beecher Stowe] লেখা "Uncle Tom Cabin" উপন্যাস থেকে। দাসপ্রথাকে নিন্দা করে লেখা উপন্যাসটি প্রকাশের প্রথমদিনে ৩০০০ কপি, প্রথম সপ্তাহে ১০০০০ কপি এবং বছর না পেরোতেই ৩০০০০০ কপি বিক্রি হয়। [৩] প্রকাশের পর ১৮৫২ থেকে ১৮৬০ সালের মধ্যে ২২ টি ভাষায় অনূদিত হয় এবং ঊনিশ শতকে বাইবেলের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বিক্রিত বই হিসেবে পরিগণিত হয়। [৪] এমনকি লেখিকা স্টু যখন প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকনের সাথে দেখা করতে যেতেন, তখন প্রেসিডেন্ট তাকে এই বলে স্বাগত জানাতেন,
"তাহলে এই সেই মহিলা, যিনি এই যুদ্ধটি বাঁধিয়েছেন!"
[৫]
সাহিত্যের শক্তি কী মূলত? সাহিত্য আসলে বিপ্লবটা ঘটায় কী করে?
এক. এটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সাহিত্য যুগের দলীল বা সাক্ষ্য। কোনো একটা টাইম পিরিয়ড কেমন ছিলো, সেটা সেই সময়কার সাহিত্য পড়ে ধারণা করা যায়। ভিক্টোরিয়ান ব্রিটেন, ফ্রান্স বিপ্লবের সময়কার ফ্রান্স, কলোনাইজেশনের সময়কার ভারত কিংবা বিশ্বযুদ্ধের জার্মানি, কেমন ছিলো? কোথায় পাবেন? সাহিত্যে পাবেন, বইপত্রে পাবেন৷ কেমন ছিলো তখনকার সমাজব্যবস্থা, সংস্কৃতি ও রাজনীতি - এসব তখনকার সাহিত্য পড়লেই জানা যাবে।
দুই. সাহিত্য হচ্ছে আনন্দ ও বিনোদনের উৎস্য। কবিতা হোক কিংবা গল্প, উপন্যাস হোক কিংবা প্রবন্ধ, নন-ফিকশন, স্যাটায়ার সব ধরণের সাহিত্যই মানুষকে আনন্দ দেয়, তৃপ্তি দেয়। তাই মানুষের আবেগ এবং কল্পনার ওপরও সাহিত্যের কব্জা থাকে। আর এই কব্জাই শক্তি। রাইকেন বলেন,
"There has never been a civilized culture that did not feel the need of producing and enjoying literature. Such universality indicates that literature springs from a basic human impulse and a basic need."
[৬]
খেয়াল করেন, রাইকেন এখানে সাহিত্যকে একটা ব্যাসিক হিউম্যান নিড বলেছেন। আর ব্যাসিক হিউম্যান নিডগুলোর হিউম্যানের ওপর কেমন প্রভাব থাকবে তা বলাই বাহুল্য।
তিন. সাহিত্য হলো আয়না। এই আয়না সমাজ ও রাষ্ট্রের প্রতিচ্ছবি। এই আয়না যেমন অতীত দেখায়, তেমন বর্তমান দেখায়। এতে মানুষ পরস্পর তূলনা করতে পারে। আমরা কি এগিয়েছি, নাকি পিছিয়েছি? সমাজ কি উন্নত হয়েছে, নাকি অবনত হয়েছে? এই আয়না মূলত সমাজকে পরিষ্কার চোখে দেখতে মানুষকে সাহায্য করে, বলা যায় মানুষের দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে। এই আয়নায় তাকিয়েই অনেক বড় বড় পরিবর্তন এসেছে যা আমি ইতোমধ্যেই উল্লেখ করেছি। এছাড়া আরেকটি ঘটনা উল্লেখযোগ্য। উনিশ শতকের লন্ডনে চার্লস ডকিন্সের "অলিভার টুইস্ট" পড়ে মানুষ বুঝতে পারলো ঘরবাড়িতে শিশুশ্রমের ভয়াবহতা ও বর্বরতা। আর এই বুঝটাই এই বিষয়ে একটা পরিবর্তন আনতে সহায়তা করেছিলো।
মূলত সাহিত্য মানুষকে দেখায়, শোনায় এবং অনুভব করায়। সাহিত্য ভাবনা তৈরি করে আর ভাবনা পরিশেষে কর্মে পরিণত হয়।
ইসলামী সভ্যতাকে আনয়ন করতে হলেও একটা বিপ্লব দরকার। অবশ্যই সেটা পলিটিকাল স্ফিয়ারে হবে। কিন্তু, সেই বিপ্লবের আগুনে জ্বালানি হবে সংস্কৃতি - বিশেষ করে সাহিত্য। অন্যকথায়, সাহিত্য হবে রাফখাতা। এই রাফখাতায় রাফ করবে সকল মতের মুসলিম চিন্তাবিদগণ। চিন্তাগুলোর কম্পারিটিভ স্টাডি হবে। রাফখাতায় কাটাকাটি হবে। অর্থাৎ, ঐকমত্য হবে আবার বিরোধ হবে। ফাইনাল আউটপুট আসার পর যেমন রাফখাতার কাটাকাটিগুলোতে খুব একটা কিছু যায় আসে না, বিপ্লবের পর সভ্যতা কায়েম হলে এইসব মতবিরোধেও কিছু যায় আসবেনা। যা গুরুত্বপূর্ণ তা হলো - চেষ্টা। লিখলেই তো তবে কাটবেন! না লিখলে কাটবেন কোথা থেকে? আমি বিজ্ঞ কেউ নই। আমি কোনো সমাধানও প্রস্তাব করছি না। আমি শুধু একটু স্বপ্ন দেখছি। এই স্বপ্নটাকে নৌকা বানিয়ে চালিয়ে দিতে ইচ্ছে হলো..যারা ওঠার উঠবে। রাফখাতা মেলে দিলাম, যারা লেখার লিখবে।
নৌকা তীরে পৌঁছাক বা না পৌঁছাক, ভেসেছিলো তা লোকে জানবে। পরিপাটি ফলাফল আসুক না আসুক, রাফখাতায় কাটাকাটিটুকু ঠিক থাকবে।
...
সাহিত্যঃ বিপ্লবের রাফখাতা
আসিফ মাহমুদ
১ শাওয়াল, ১৪৪২ হিজরি।
১৪ মে, ২০২১ ঈসায়ী।
#JagoronEidExclusive
রেফারেন্সঃ
১. America's Right Turn: How Conservatives Used New and Alternative Media to Take Power, p-10.
২. Christopher Hill, The English Bible and the Seventeenth-century Revolution, Englad: Penguin Press 1993, p-4.
৩. John Garatty, A Short History of the American Nation, USA 1985, P-238.
৪. In the Literary world quoted in theNina Baym (ed) Anthology.
৫. Hugh Broggan, The Penguin History of USA, Reading: Longman 1985.
৬. Leyland Ryken. Triumphs of the imagination: Literature and in Christian Perspective, Illinois: Intervarsity press 1979, p-29.

Post a Comment

1 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.
  1. আমারও কাটাকুটিপূর্ণ একটি রাফখাতা সম্পূর্ণ করতে,,আপনার লেখায় চোখ বুলানো নয় বরং ডোবানো অতীব প্রয়োজন শ্রদ্ধেয়।

    ReplyDelete